আবুল কালাম আযাদ
কক্সবাজার জেলাধীন রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালায় বিট কর্মীদের সাথে সংগঠিত সংঘর্ষে স্থানীয় পূর্বপাড়ার ফরিদুল আলমের পুত্র মোঃ ফয়সাল সহ এলাকাবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষে আহতের ঘটনায় দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা অব্যাহতি চেয়ে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরোয়ার কাবেরীর নেতৃত্বে জোয়ারিয়া নালা উচ্চ বিদ্যালয় গেইটে এক মানববন্ধন এর আয়োজন করা হয়।এতে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।আলোচনা শেষে অংশগ্রহণকারীরা মাদ্রাসার গ্রামীণ ব্যাংক পর্যন্ত সড়ক প্রদক্ষিণ করে পরে মাদ্রাসা গেইটে ফিরে এসে সকলে সমবেত হয়। উল্লেখ্য যে, গত ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ইংরেজী তারিখ স্থানীয় ফরিদুল আলমের পুত্র ফয়সালের(২৭) সাথে মুরগির খামার ভাংচুরের বিষয়ে বন বিভাগের বিটকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে এলাকাবাসীরা প্রতিবাদ করতে এসে তারাও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে বিট কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ টিটু হাওলাদারসহ ৫ কর্মী আহত হয়।এ ঘটনায় বিট কর্মকর্তা বাদী হয়ে ফরিদুল আলমের পুত্র মোঃ ফয়সালসহ ১০জন এবং অজ্ঞাতনামা আরো ৪০/৪৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফরিদুল আলমের পুত্র মোঃ ফয়সাল তার খতিয়ানভুক্ত জমিতে (বিএস খতিয়ান ৩৬৩,সৃজিত বি এস খতিয়ান ১৫৬৫,বি এস দাগ ৮৫৯৩,জমির পরিমাণ ১.৩০একর) ৫/৬ মাস সময় নিয়ে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মুরগির খামারটি নির্মাণ করেন।সূচনা লগ্নে মাটি ভরাটের সময় প্রথমে স্থানীয় বনবিভাগ থেকে বাঁধা আসলেও তার খতিয়ানভূক্ত জায়গা হওয়ায় তাদের সাথে আপোষ রফা হয়। এর পর থেকে আর কোন প্রকার বাধা আসেনি এবং প্রায় ছয় মাস সময় নিয়ে মোহাম্মদ ফয়সাল মুরগির খামার তৈরি করেন বলে জানান। মুরগি তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন এমন পর্যায়ে গত ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইংরেজি তারিখ রোজ শনিবার ভোর ৫:০০ ঘটিকায় বিট কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ টিটুর নেতৃত্বে একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মাহমুদ ফয়সাল এর মুরগির খামার ভাঙচুর শুরু করেন। এক পর্যায়ে এলাকাবাসী প্রতিবাদ জানালে বনবিভাগের লোকজনের সাথে স্থানীয় এলাকাবাসীর সংঘর্ষ হয়।এতে আহতের ঘটনা ঘটে।এসময় অভিযান পরিচালনার বিষয়টি ছিল বিনা নোটিশে।ভোর ৫ ঘটিকার সময় অভিযান পরিচালনার বিষয়টি ছিল বিনা নোটিশে। স্থানীয় হেডম্যান বশির আহমদ এমনকি প্রায় ১০০জন ভিলেজারের কেউ অভিযানের ব্যাপারে অবগত নয় বলে জানান আমাদের প্রতিনিধি কে।অভিযানের দিন শনিবার সকাল ৯:০০ ঘটিকায় স্থানীয় ভিলেজারদের সাথে কর্মকর্তাদের বৈঠকের কথা ছিল। অভিযানের পরিকল্পনা থাকায় শুক্রবার রাতে বৈঠকের দিন পরিবর্তনের ঘোষণা দেন বিট কর্তৃপক্ষ। ইতিপূর্বে মাসখানেক আগে স্থানীয় নুর আলমের পুত্র মোঃ আরিফ হোসেনের তিলে তিলে গড়া ৫০০০ লেবু গাছ লেবু সহ অনুরূপভাবে রাতের আধারে কেটে সাবাড় করে দেন সুলতান মাহমুদ টিটুর নেতৃত্বে বিট কর্মীরা এবং পিতা-পুত্রের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় তারা বর্তমানে জেলহাজতে আছে।নজির আলমের স্ত্রী বলেন,তাদের পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদ্বয় কারান্তরিন থাকার কারনে তিনি তার প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে বর্তমানে খুবই মানবেতর জীবন যাপন করছেন।এটি নিয়ে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। আজকের মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ফরিদুল আলম, তার স্ত্রী আমিনা খাতুন তাদের ছেলের বউ তসলিমা আক্তার। তারা তাদের খতিয়ান ভূক্ত জমি উদ্ধারপূর্বক মিথ্যামামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান। কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বিশিষ্ট নারী নেত্রী নাজনীন সরওয়ার কাবেরী বলেন, এই ঘটনায় দায়েরকৃত মিথ্যা মামলার ব্যাপারে আমি ডি পু র সাথে কথা বলেছিলাম। তিনি আমাকে কথা দিয়েছিলেন মামলা প্রত্যাহার করবেন,কিন্তু তিনি কথা রাখেননি। পরবর্তীতে বিনা নোটিশে মুরগির খামার ভাংচুর নিঃসন্দেহে একটি অমানবিক কাজ। শেখ হাসিনার সরকার একটি জনবান্ধব সরকার। এ সরকারের সমস্ত কর্ম পরিকল্পনা সাধারণ মানুষের কল্যাণের স্বার্থে। স্থানীয় জনগণের সাথে সমন্বয় করে কর্মপরিকল্পনা ঠিক করলে এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি হবেনা এবং সরকারের সাথে জনগনের একটা মেলবন্ধন সৃষ্টি হবে, দেশের সঠিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত হবে।স্হানীয় অসহায় জনসাধারণের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে তাদেরকে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে তিনি বন -কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।